লোক দেখানো মনোভাব ত্যাগ করা

আমাদের মাঝে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা সমাজে সম্মান পাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকমের কাজ করে থাকে। তার মধ্যে কিছু মানুষ রয়েছে যারা ভাবে ধার্মিক হলেই প্রকৃতপক্ষে সমাজে অনেক সম্মান পাবে। কিন্তু তারা প্রকৃতপক্ষে ধার্মিক না তারা শুধু লোক দেখানোর জন্য ধার্মিক হওয়ার একটি অভিনয় করেছে যাতে তারা সমাজে সম্মান পেতে পারে। তারা সমাজে একটু ভিন্নভাবে লোকজনের কাছে উপস্থাপন করতে চায় যে তারা অনেক ধার্মিক এবং ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট। এরকম লোক দেখানো মানুষকে আল্লাহ তা’আলা কখনোই ক্ষমা করেন না। এই লোক দেখানো নিয়ে ইসলামিক কিছু বানী।
  • যে ব্যবহার জানে না, তার গর্ব করার মত কিছুই নেই। –  ডেমো ন্যাস্ক
  • ভালো ব্যবহার করতে গেলে ছোট ছোট স্বার্থ ত্যাগ করতেই হয়। –   ইমারসন
  • রিয়া কিংবা লোক দেখানো প্রদর্শনী হচ্ছে একটি ছোট আকারের শিরক। –   সংগৃহীত
  • সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি তোমাদের ব্যাপারে ভয় পায় তা হল শিরক আসগার ক্ষুদ্রতর শিরক আর এই শিরক হল লোক দেখানো। –  মাহমুদ ইবন লাবিদ (রাঃ)

লোক দেখানো নিয়ে স্ট্যাটাস

আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষের রয়েছে যারা তাদের প্রশংসা পেতে লোক দেখানো কাজ করে থাকেন। যেমন প্রশংসা পেতে আপনারা ধার্মিক হয়ে যান মানুষের সামনে আপনারা দেখান আপনারা ধার্মিক এবং ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর কাছে মনে হবে কারণ তারা লোক দেখানোর জন্য এই বাত করতে সে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য নয়। আর কেউ না চাইতে মানুষ তার প্রশংসা করে এটা এই মুমিন বান্দার কাছে সুসংবাদ। আপনারা লোক দেখানো নিয়ে স্ট্যাটাস শেয়ার করতে চান এখন। এই পোস্ট থেকে আপনারা লোক দেখানো নিয়ে কিছু স্ট্যাটাস পেয়ে যাবেন।
  • গীবত মানুষের ঈমান ও আমল কে ধ্বংস করে দেয়।
  • লোক দেখানোর জন্য যদি আমরা ইমান আলী তাহলে সেটা সে ব্যক্তির জন্য খুবই ভয়ঙ্কর।
  • অবশ্যই আপনি মাথায় রাখবেন লোক দেখানো আমল গুলো আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় নয়। 
আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে খুশি করার নিয়তে কোনো নেক আমল করাকে রিয়া, লৌকিকতা বা লোক-দেখানো কাজ বলে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ লোক-দেখানো ইবাদত থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) রিয়াকে ছোট শিরক (আল্লাহর অংশীদার নির্ধারণ) বলেছেন।

আল্লাহ তা‘আলার নিকটে আমল কবুল হওয়ার জন্য রিয়া বা লৌকিকতামুক্ত এবং কুরআন-সু্ন্নাহ নির্দেশিত নিয়মে হওয়া অপরিহার্য। যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য ইবাদত করবে, সে ছোট শির্ক করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবে এবং তার আমল বরবাদ হয়ে যাবে। যেমন লোক দেখানো সালাত। আল্লাহ তা‘আলা এ সম্পর্কে বলেন,

“নিশ্চয় মুনাফিকরা আল্লাহর সঙ্গে প্রতারণা করে। আর তিনি তাদের সাথে (সেটার জবাবে) কৌশল অবলম্বনকারী। আর যখন তারা সালাতে দাঁড়ায় তখন আলস্যভরে দাঁড়ায়। তারা লোকদের দেখায় যে তারা সালাত আদায় করছে; কিন্তু আল্লাহকে তারা কমই স্মরণ করে”। [ সূরা আন-নিসা, আয়াত: ১৪২]

স্বীয় কাজের কথা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ুক এবং লোকেরা শুনে বাহবা দিক এ নিয়তে যে কাজ করবে সে শির্কে নিপতিত হবে। এরূপ বাসনাকারী সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“যে ব্যক্তি মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে তাকে (কিয়ামতের দিন) শুনিয়ে দিবেন। আর যে লোক দেখানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে তাকে (কিয়ামতের দিন) দেখিয়ে দিবেন।”

যে আল্লাহ ও মানুষ উভয়ের সন্তুষ্টিকল্পে ইবাদত করবে তার আমল বরবাদ হয়ে যাবে। হাদীসে কুদসীতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন,

“আমি অংশীবাদিতা (শির্ক) থেকে সকল অংশীদারের তুলনায় বেশি মুখাপেক্ষীহীন। যে কেউ কোনো আমল করে এবং তাতে অন্যকে আমার সাথে শরীক করে, আমি তাকে ও তার আমল উভয়কেই বর্জন করি”। তবে কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে কোনো আমল শুরু করার পর যদি তার মধ্যে লোক দেখানো ভাব জাগ্রত হয় এবং সে তা ঘৃণা করে ও তা থেকে সরে আসতে চেষ্টা করে, তাহলে তার ঐ আমল শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি সে তা না করে; বরং লোক দেখানো ভাব মনে উদয় হওয়ার জন্য প্রশান্তি ও আনন্দ অনুভব করে, তাহলে অধিকাংশ আলেমের মতে তার ঐ আমল বাতিল হয়ে যাবে।